ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগের পর আদানি গ্রুপের শেয়ারে ধস ব্যারিস্টার সুমনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ লিখে রাখেন, আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হবো : শাহজাহান ওমর আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বাহারুল আলম মূল সড়কে না হলেও অলিগলিতে চলার অনুমতি চান অটোরিকশা চালকরা নতুন সিইসি হলেন সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন নির্বাচন কমিশনার হলেন যারা বার্সার প্রস্তাব পেয়েও যে কারণে যোগ দেননি বুফন মারা গেছেন সাবেক ব্রিটিশ উপ-প্রধানমন্ত্রী জন প্রেসকট রিকশাচালকদের হটালো সেনাবাহিনী, যানচলাচল শুরু রামপুরায় অনিয়ম রোধে রেলে যুক্ত হলো ৫ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের প্রাণহানিতে শীর্ষে মিয়ানমার সায়ানাইড দিয়ে বন্ধুদের হত্যার দায়ে এক নারীর মৃত্যুদণ্ড মামলা করতে গিয়ে গ্রেপ্তার সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে নিহত ৩৬ আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ তিশার সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন জেড আই খান পান্না মির্জা ফখরুলের সাথে বৈঠকে ভুটানের রাষ্ট্রদূত ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা ৬ মামলা বাতিল

সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দাদের আত্মীয়রাও যেতে পারছে না দ্বীপে

  • আপলোড সময় : ০৯-১১-২০২৪ ১২:০২:৪২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-১১-২০২৪ ১২:০২:৪২ অপরাহ্ন
সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দাদের আত্মীয়রাও যেতে পারছে না দ্বীপে
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে আনুষ্ঠানিক কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও দ্বীপের বাসিন্দা ছাড়া সেখানে কেউ বেড়াতে যেতে পারছেন না। নভেম্বর মাসে পর্যটকরা যেতে পারবেন, তবে থাকতে পারবেন না এমন ঘোষণা থাকলেও দ্বীপ ভ্রমণের সব ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। দ্বীপটির বাসিন্দারা বলছেন, তাদের আত্মীয়-স্বজনরাও বেড়াতে যেতে পারছেন না। পর্যটন ব্যবসায়ী এবং দ্বীপের স্থানীয়রা বলছেন, সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে এমন কড়াকড়ি কখনোই ছিল না, যেটি গুজব সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি করেছে।পর্যটন শুরু করা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তাও কাজ করছে সবার মধ্যে।সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী নভেম্বর মাসে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে বাধা থাকার কথা নয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেখানে বেড়াতে যাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদেরকেও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে নিজ এলাকায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। এমনকি নভেম্বরের চার তারিখে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেন্ট মার্টিন যেতে বিবিসির এই প্রতিবেদককে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে কোস্ট গার্ডকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দিতে হয়েছে।

সরেজমিনে কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন ঘুরে এবং কোস্ট গার্ড, স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে আলাপ করে মনে হয়েছে, নভেম্বর মাসেও সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে এক ধরনের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা চলছে। নভেম্বর মাসে সেন্ট মার্টিনে পর্যটন আদৌ চালু করা সম্ভব হবে কি না সেটি নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে।সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের দ্রুতগামী যাতায়াদের আরেকটি ব্যবস্থা হলো স্পিডবোটে চলাচল। নিরাপত্তার বিবেচনা থেকে স্পিডবোট চলাচলও এখন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।বিশেষ অনুমতি ছাড়া স্পিডবোট চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না।যাতায়াতের জন্য এখনো সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী একটিও জাহাজ চলাচল শুরু হয়নি। স্পিডবোট চলাচলও বন্ধ। যাত্রীবাহী ট্রলার বা সার্ভিস বোট চলাচল করলেও ভ্রমণ করতে লিখিত অনুমতি লাগছে। সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা ছাড়া কাউকে ভ্রমণ করতে দেওয়া হচ্ছে না।দ্বীপের অধিবাসী কি না নিশ্চিত করতে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ট্রলারের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। দফায় দফায় কোস্ট গার্ড যাত্রীদের এনআইডি যাচাই করছে।অন্যদিকে ভ্রমণের জন্য কোনো অনুমোদন দিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। উপজেলা পরিষদে একাধিক দেয়ালে বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে- ২২ অক্টোবর থেকে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে কোনো অনুমতি দিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন।

সেন্ট মার্টিন যাওয়ার অনুমতি নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, পর্যটন পারপাসে এখন অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এখন এনজিও কর্মী, গবেষণার কাজে কিংবা সংবাদ সংগ্রহের মতো জরুরি প্রয়োজনে যারা যায়, তাদেরকেই শুধু অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।সেন্ট মার্টিন গিয়েও কোস্ট গার্ডের চেকপোস্ট রয়েছে। সেখানে নাম-পরিচয় লিপিবদ্ধ করে দ্বীপে প্রবেশ করতে হয়। ভ্রমণে কড়াকড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্ট মার্টিনে কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার এস এম রাশাদ হায়দার বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভ্রমণ করতে কেউ সেন্ট মার্টিন যাতে না আসতে পারে, সে জন্য তারা মনিটরিং করছেন। কেউ যদি সেন্ট মার্টিন দ্বীপে চলে আসে, তাকে ফেরত পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, সমন্বয় সাধন করেই যাওয়া-আসাটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এখানে যাদের অনুমতি আছে তাদের আসতে আসলে কোনো বাধা নেই। বাট ভ্রমণটা যেহেতু এখনো নিষিদ্ধ, ভ্রমণ শুরু হলে ওনারাও আসতে পারবেন।এদিকে পর্যটনে এমন কড়াকড়ির ফলে দ্বীপের বেশির ভাগ দোকানপাট, পর্যটনকে ঘিরে নির্মিত হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ। ভ্রমণে এই কড়াকড়ি নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেন দ্বীপের স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী এবং বাইরে থেকে যাওয়া বিনিয়োগকারীরা। বাইরে থেকে যারা পর্যটন খাতে দ্বীপে বিনিয়োগ করেছেন তারা পড়েছেন মারাত্মক বিড়ম্বনায়। পর্যটনের প্রস্তুতি, সেবা দেওয়ার জন্য স্টাফ আনারও সুযোগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।

সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দৈনিক দুই হাজার করে পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে পারবেন, যার প্রতিবাদে নিয়মিত বিক্ষোভ আন্দোলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি চলছে সেন্ট মার্টিনে। পাঁচই নভেম্বর সেখানে বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধন করেন দ্বীপের ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসীন্দারা।সেখানে উপস্থিত একজন বলেন, ‘এই দ্বীপের সঙ্গে অন্য এলাকার যারা আত্মীয়তা করছেন, তারাও আসতে পারছেন না। বউ আনলে বউ আসতে পারছেন না, জামাই হলে জামাই আসতে পারছেন না। তা হলে এটা কোন ধরনের স্বাধীনতা আমরা বুঝলাম না।’রিসোর্টের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মো. জসিম বলেন, সেন্ট মার্টিনে দ্বীপের দশ হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা এবং পরিবেশ দুটোই সমান গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা  

কমেন্ট বক্স